২৭ এপ্রিল, ২০২৪, শনিবার

বরিশালে বেকার যুবকদের আশার আলো সুফিয়ানের ড্রাগন বাগান

Advertisement

বরিশালের বাবুগঞ্জের আবু সুফিয়ান মো. পারভেজের বিশাল ড্রাগন বাগান এখন বেকার যুবকদের আশার আলো। এক যুগ প্রবাস জীবন কাটানোর পর দীর্ঘ মেয়াদে আয়ের জন্য ২ বছর আগে এই বাগান করেছেন তিনি। বাগান করার এক বছরের মধ্যেই ড্রাগন ফল বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা আয় করেছেন সুফিয়ান। ড্রাগনের উৎপাদন বাড়াতে পারভেজের মতো কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।

মরুর দেশ দুবাইতে এক যুগ প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২০২০ সালে দেশে ফিরে আসেন বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের ইদেলকাঠি গ্রামের আবু সুফিয়ান মো. পারভেজ। স্থায়ী আয়ের পথ তৈরি করতে ২০২১ সালের জুন মাসে নিজের এবং অন্যের ৭০ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলেন বিশাল এক ড্রাগন বাগান। ৩২৫টি পিলারে বিভিন্ন জাতের ৩ হাজার ড্রাগন চারা রোপণ করেন তিনি। রোপণের ১ বছরের মধ্যেই ফলন আসতে শুরু করে তার বাগানে। প্রথম বছরে ২ হাজার ১০০ কেজি ড্রাগন ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন সুফিয়ান।

ড্রাগন চাষি আবু সুফিয়ান জানান, চাকরি ছেড়ে দীর্ঘ মেয়াদী কিছু করার জন্য নিজেকে কৃষি কাজে নিয়োজিত করেন তিনি। ড্রাগনের চেয়ে লাভজনক ফল দেশে নেই। সঠিক গুণগত মান সম্পন্ন ড্রাগন উৎপাদন করতে পাড়লে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। পারভেজের ধারণা চাকরি কিংবা ব্যবসায় লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া কৃষি কাজে লোকসানের আশঙ্কা নেই। তাই এই পথ বেঁচে নিয়েছেন তিনি।

ড্রাগনের সাথী ফসল হিসেবে একই বাগানে রসুন, পিয়াজ, স্ট্রবেরি, ধনে ও স্কোয়াশসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করছেন সুফিয়ান। আশপাশে এ ধরনের বাগান না থাকায় আগ্রহ ভরে প্রতিদিন সুফিয়ানের বাগান দেখতে আসছেন অনেকে। তাদের অনেকই ড্রাগন বাগান করার পরামর্শ নিচ্ছেন তার কাছ থেকে। লাভজনক ফল ড্রাগন চাষ করার কথা বলেছেন এদের কেউ কেউ।

ড্রাগন বাগান দেখতে আসা মো. আরিফ জানান, ড্রাগনের সাথী ফসল হিসেবে অন্য সবজি চাষ করা যায়, সেটা সুফিয়ানের বাগান না দেখলে বুঝতে পারতেন না। সুফিয়ান ভাই যুব সমাজের চোখ খুলে দিয়েছে। গ্রামে বসবাস করে নিজের জমিতে কৃষি কাজ করে সাবলম্বী হওয়া যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আবু সুফিয়ান। 

মো. শহিদুল ইসলাম নামে এক দর্শনার্থী জানান, চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষির উপর নির্ভরশীল হয়ে ভাগ্য উন্নয়ন করা সম্ভব। যার উদাহরণ বাবুগঞ্জের ড্রাগন বাগান। এ বিষয়ে আবু সুফিয়ানের কাছ থেকে নানা পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে। তার পরামর্শে ওই এলাকার অনেকেই ড্রাগন বাগান করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ডা. গফুর উদ্দিন মঞ্জু জানান, পারভেজের দৃষ্টান্ত দিয়ে এলাকার যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করছি। সে ড্রাগনের বাগান করে লাভবান হয়েছে। এই ড্রাগন গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ফলনও বেশি হচ্ছে। এই কৃষি পদ্ধতি দেখে এলাকার বেকার সমস্যার সমাধান হতে পারে।

বাবুগঞ্জ উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, বরিশালে ড্রাগন চাষ খুবই কম। পারভেজের বাগান দেখে আরও অনেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ড্রাগন চাষ বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। তখন ড্রাগন সহজলভ্য হবে। ড্রাগন চাষে আগ্রহীদের সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা বলেন তিনি।

ভিয়েতনামী রেড, তাইওয়ান রেড, রেড ভেলভেট, পিঙ্ক রোজ এবং ভিয়েতনামী বিগ জায়েন্ট ও হলুদ জাতসহ ৭০ শতাংশ জমিতে মোট ৫ ধরনের ড্রাগন চাষে ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে পারভেজের।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement