১৪ মে, ২০২৪, মঙ্গলবার

বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকটে খেলার মাঠে পাঠদান

Advertisement

নাটোরের বাগাতিপাড়ার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ নূরপুর মালঞ্চি উচ্চ বিদ্যালয়টিতে শ্রেণিকক্ষ সংকটে খোলা আকাশের নিচে মাঠের মধ্যে এমনকি বারান্দায় পাঠদান চলছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টায় সরেজমিন বিদ্যালয়টি ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় এই বিদ্যাপীঠ থেকে বেরিয়ে চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কর্মরত আছেন। একসময়ের সেই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে শ্রেণিকক্ষ সংকট দেখা দেওয়ায় কিশোর বয়সের শিক্ষার্থীদের মাঠের মধ্যে ছাড়াও কখনো কখনো বারান্দায় ক্লাস করতে হচ্ছে। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুর হোসেন জানান, তার বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলটিতে তিনজন শিক্ষকের স্বল্পতা থাকায় খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ক্লাস চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ে তিনটি পৃথক ভবন রয়েছে। দুটি পাকা একতলা ভবন এবং অপরটি পুরনো টিনশেড ভবন। পাকা ভবনের একটি কক্ষের একাংশে প্রধান শিক্ষক এবং অপর অংশে শিক্ষক ও অফিস সহকারীর বসার ব্যবস্থা রয়েছে। 

অন্য দুটি কক্ষের একটিতে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, অপরটিতে বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি করা হয়েছে। মূল্যবান যন্ত্রাংশ সেখানে রাখা রয়েছে। অপর একটি ভবন ১৯৯৪ সালে নির্মিত। সেখানে তিনটি কক্ষে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাধারন ক্লাস চলে। আর পুরনো টিনশেডের প্রায় পরিত্যক্ত ভবনের চারটি কক্ষের একটিতে পাঠাগার, একটি বালিকাদের কমনরূম এবং অপর দুটিতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠদান করানো হয়। সবমিলিয়ে পরিপূর্ণভাবে ৫টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ছয়টি শ্রেণির ক্লাস চালাতে গিয়ে সবসময় একটি শ্রেণিকে মাঠে বসাতে হয়। তাছাড়াও বিজ্ঞান ও মানবিকের পৃথক ক্লাসের সময় এবং ধর্মীয় ক্লাসের সময় ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের একসঙ্গে ক্লাস করাতে গিয়ে তাদের বারান্দায় বা মাঠে বসাতে হচ্ছে। গত বছরে সংকট দূরীকরনে শিক্ষা ও প্রৌকশল অধিদপ্তরে একটি আবেদনও জানানো হয়েছে।  

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার একই সঙ্গে আটটি ক্লাস চলমান রয়েছে। পাঁচটি শ্রেনিকক্ষে, পাঠাগারে একটি এবং নবম শ্রেণির গণিত ক্লাস মাঠে এবং হিন্দু ধর্মের ক্লাস চলছে পাকা ভবনের বারান্দায়। জরাজীর্ন টিনসেড ভবনে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে। একটি অর্ধপুরোনো পাকা ভবনের পলেস্তরা খসে পড়ছে এমন ভবনে তিনটি ক্লাস চালানো হচ্ছে। তবে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি এবং পাঠাগার ও ছাত্রীদের কমনরূমে চারটি কক্ষ ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে শ্রেণি কক্ষের সংকট তৈরি হয়েছে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন জানান, সবসময়ই একটি শ্রেণির ক্লাস মাঠে করতে হয়। রোদের মধ্যে ক্লাস করতে কষ্ট হয়। এ বিষয়ে পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফরোজ্জামান নিপুণ বলেন, বাইরে থেকে ঠাঁট-বাঁট দেখা গেলেও স্কুলটিতে শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। তা ছাড়া সরকারি নির্দেশনার কারণে কম্পিউটার ও বিজ্ঞান ল্যাব এবং পাঠাগার রাখা হয়েছে। পাকা ভবনটির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা গেলে শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকবে না বলেও তিনি জানান। 

এ জন্য তিনি নতুন ভবন বরাদ্দের দাবি জানান।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement