২৭ এপ্রিল, ২০২৪, শনিবার

ব্রোকলি চাষে ব্যাপক  লাভবান ময়নাল হোসেন

Advertisement

কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভার ছোটআলমপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ময়নাল হোসেন। প্রথমে শখের বশে ব্রোকলি চাষ শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর চলতি মৌসুমে নিজের প্রায় ১৫ শতাংশ জমিতে ব্রোকলি চাষ করে ব্যাপক লাভবান হন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ফলন ভালো হওয়ায় খুশি ময়নাল। তাকে দেখে এখন অনেকেই আগ্রহী হয়েছেন ব্রোকলি চাষে।

ময়নাল হোসেন বলেন, ‘এটি আমার পারিবারিক ব্যবসা। আমার বাবা ও দাদারা কৃষিকাজ করেছেন প্রায় ৪০ বছর। এখন আমি শুরু করেছি। আগে অন্য সবজি চাষ করতাম। কয়েক বছর ধরে শখের বশে ব্রোকলি চাষ শুরু করি। ব্রোকলি চারা নিজেরাই উৎপাদন করি। চারা বেচেও আমি লাভবান হয়েছি। গত বছর চার লাখ টাকার ব্রোকলি চারাসহ অন্যান্য চারা বিক্রি করেছি। চারা বিক্রি শেষে এ জমিতেই ব্রোকলিসহ অন্তত সাত থেকে আটটি পদের সবজি চাষ করি। আমার পরিবারের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে পাইকাররা জমি থেকে সবজি কিনে নিয়ে যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৫ শতক জমিতে ব্রোকলির চাষে আট থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর চাষাবাদে কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার না করে পোকা দমনে বিভিন্ন ফাঁদ ব্যবহার করেছি। ভালো ফলনের জন্য শুকনো গোবর ও কিছু পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। এতে বাম্পার ফলন হওয়ায় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার ব্রোকলি বিক্রি করার আশা রয়েছে। ব্রোকলি ছাড়াও আমি একই জমির কিছু অংশে ফুলকপি, লাল বাঁধাকপি, ওলকপি, লেটুস পাতা, মরিচ, টমেটো, শালগম, দেশীয় ফুলকপি চাষ করি।’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘ফুলকপির মতো দেখতে গাঢ় সবুজ রঙের শীতকালীন এ ফসলটি চাষে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন ময়নাল হোসেন। তার কাছ থেকে অনেক কৃষক বীজ সংগ্রহ করে এ সবজি চাষ শুরু করেছেন। এ সবজিতে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।’

দেবিদ্বার নিউমার্কেটের কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘সবজিটি এখন বাজারের ক্রেতাদের কাছে খুবই প্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি দুদিন পর পর ময়নালের জমি থেকে ব্রোকলি ফুলকপি সংগ্রহ করি। প্রতিটির দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে কিনি। বাজারে প্রতিটি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি করি। মানুষের চাহিদাও বেশি। এ সবজিটি বেশি উৎপাদন করা গেলে চাহিদা আরও বাড়বে।’

উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ময়নাল হোসেনের সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও উৎসাহিত হয়ে ব্রোকলির চাষাবাদ শুরু করেছেন। ব্রোকলিতে ভিটামিন সি রয়েছে। এটি ক্যানসার প্রতিরোধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া গ্যাসট্রাইটিস প্রতিরোধ, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ত্বক সুন্দর করে। তবে ব্রোকলি কেনার সময় সতেজ, শক্ত কুঁড়ি ও গাঢ় সবুজ দেখে কিনতে হবে। ব্রোকলির শুধু কুঁড়ি অংশটি খেতে পারেন। আবার চাইলে নরম ডাঁটা অংশটুকু রাখতে পারেন। ডাঁটাতেও পুষ্টি রয়েছে। ব্রোকলি রান্নার পাশাপাশি সালাদ ও মাংসের সঙ্গে রোস্ট করে খাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেইজি চক্রবর্তী বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে এ সবজি চাষ শুরু করা গেলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ক্রেতারাও খেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। এটির চাষে উপজেলা থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও সহযোগিতা করা হবে।’

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement