জাপানের টোকিওর নেজু জেলায় একটি পাথরের সিঁড়ি রয়েছে যা সত্যিই অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। সিঁড়িটি ‘অবাকে কায়দান’নামে পরিচিত। আক্ষরিক অর্থে ‘ভূতের সিঁড়ি’। অবাকে কায়দান আদতে একটি পাথুরে সিঁড়ির নাম। রহস্য তাকে ঘিরেই। এই সিঁড়িটি বেয়ে উপরে যাওয়ার পথে ৪০টি ধাপ রয়েছে। তবে যখন নিচে নামা হয় তখন ৩৯টি ধাপ।
অদ্ভুত এই বৈশিষ্ট্যের জন্য স্থানীয়রা সিঁড়ির নাম দিয়েছেন অবাকে কায়দান। জাপানি ভাষায় অবাকে মানে ভূত। আর কায়দান হলো সিঁড়ি। অর্থাৎ ভূতের সিঁড়ি। এই ‘ভূতের সিঁড়ি’বেয়ে ওঠা নামা আক্ষরিক অর্থেই ভুতুড়ে অভিজ্ঞতা ছিল এক সময়ে। অন্ধকার গলিতে এক ফালি সিঁড়ি। তার উঁচু নিচু ধাপ, কোণায় গজানো ঘাস, স্যাঁতসেতে আলো আঁধারি পরিবেশ মিলিয়ে বেশ গায়ে কাঁটা দেওয়া একটি আবহ তৈরি হত। ‘ভুতের সিঁড়ি’ নামকরণের একটি কারণ সেটাও।
এখন অবশ্য টোকিওর ঐ ‘কায়দান’অনেকটা প্রশস্ত। ঝকঝকে রেলিংও বসেছে তার মাঝ ববরাবর। তবে পুরনো সিঁড়ির ফালিটি কোনো অজানা কারণে এখনও কিছুটা চাকচিক্যহীন, অবিন্যস্ত। টোকিও ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে এই সিঁড়ি একটি দর্শনীয় স্থান। সিঁড়ি নিয়ে লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে নানা গল্পও। কেউ বলেন, সিঁড়িটি কবরখানার পাথর দিয়ে তৈরি। কারো মতে, এই সিঁড়িতে সেই সব মানুষের সমাধির পাথর দিয়ে তৈরি যাদের মৃত্যু হয়েছে গোপনে, আড়ালে, যা সাধারণের থেকে লুকোতে চাওয়া হয়েছে।
তবে সেই সব কাহিনী আদতে কাহিনীই। ‘অবাকে কায়দান’এর অবাক করা ধাঁধার সমাধান রয়েছে চোখের সামনেই। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, পাথুরে সিঁড়ির প্রথম ধাপটি প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। যা ওঠার সময় চোখে পড়লেও নামার সময় এড়িয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। বাস্তবেও তো ওঠার সময়ই সিঁড়িকে পায়ে দলে উঠি আমরা, নামার সময় ভুলে যাই, টোকিয়োর অবাকে কায়দানকে মানুষের সেই স্বভাবেরই প্রতিফলন বলা যায়। বলছেন মনোবিদরা।
সূত্র: আনন্দবাজার