২৭ এপ্রিল, ২০২৪, শনিবার

যা যা যুক্ত হবে ইলন মাস্কের টুইটারে

Advertisement

বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলার বা ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার কিনেছেন। টুইটার কেনার প্রসঙ্গে দুই সপ্তাহ আগে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, টুইটারের যে অসাধারণ সম্ভাবনা আছে, তিনি তার পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখতে চান। আর সে জন্য তিনি মনে করেছিলেন, টুইটার তার নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা উচিত। এবার তার সেই ভাবনা বাস্তব রূপ পেল।

টুইটার বোর্ডের পক্ষে ব্রেট টেলর জানান, দীর্ঘ বৈঠকের মধ্য দিয়ে মাস্কের প্রস্তাবের মূল্যায়ন করা হয়েছে। আর্থিক মূল্য ও নিশ্চয়তা-উভয় দিক পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়, মাস্কের প্রস্তাব ঠিকঠাক। তাদের বিশ্বাস, এটাই টুইটারের প্রত্যেক শেয়ারহোল্ডারের জন্য সবচেয়ে ভালো।

টুইটারের সিইও পরাগ আগারওয়াল বলেন, ‘টুইটারের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে, যা সারা বিশ্বকে প্রভাবিত করে। আমাদের পুরো দলের জন্য আমি ভীষণ গর্ব অনুভব করছি।’

কয়েক দিন আগেই মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের ৯ দশমিক ২ শতাংশ মালিকানা কিনে নিয়েছিলেন ইলন। এবার পুরো মালিকানাই তার। মাস্কের দাবি, তিনি টুইটারের অংশীদার হওয়ার সময়ে ভেবেছিলেন, টুইটার বিশ্বজুড়ে বাক্স্বাধীনতার মূল মাধ্যম হয়ে উঠবে। কিন্তু বিনিয়োগ করার পরেই নাকি তিনি উপলব্ধি করছেন, বর্তমান অবস্থায় টুইটারের পক্ষে তা কখনোই সম্ভব নয়। তাই ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সংস্থা হিসেবে এর বদল ঘটানোই তার লক্ষ্য।

মাস্ক কিছুদিন আগে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, টুইটারের আরও উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ হওয়া দরকার। বাক্স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এর আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া উচিত।

ব্লু-টিক: প্রতিটি টুইটার ব্যবহারকারীই মাস্কের আমলে যাচাই করা অ্যাকাউন্টের অধিকারী হতে চলেছেন। মাস্ক মনে করেন, প্রতিটি অ্যাকাউন্ট যাচাই করা উচিত। কিছু যাচাই করা, আর কিছু সাধারণ-এভাবে স্বচ্ছতা বজায় রাখা অসম্ভব। তাই প্রতিটি টুইটার ব্যবহারকারী পাবেন ‘ব্লু-টিক’ তকমা।

মতপ্রকাশের অবাধ ক্ষেত্র: পক্ষে কিংবা বিপক্ষে মন্তব্য যা–ই হোক, আইনের গণ্ডিতে না ঠেকলে তা প্রকাশ করবে টুইটার। ভালো-মন্দ বিবেচনার ভার ব্যবহারকারীর। কারণ, টুইটার কোনো নির্দিষ্ট টুইট নিষিদ্ধ করার নীতি নিয়ে জনমানসে বহুল অসন্তোষ রয়েছে। তাই এ জন্য প্রতিটি ব্যবহারকারী যাতে অবাধে নিজের মত জানাতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে চান মাস্ক। তার ঘোষণা, আইনবিরুদ্ধ কিছু ছাড়া, বাকি সবই শোভা পাবে টুইটারে। তা সে পক্ষে হোক কিংবা বিপক্ষে।

ফেক অ্যাকাউন্ট বন্ধ: ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে জনমত নিয়ন্ত্রণের দিন শেষ। এ জন্য ব্যবহার করা হবে আরও আধুনিক এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তি। মাস্কের বক্তব্য, বিশেষ কোনো মতবাদ ছড়িয়ে দিতে বা নির্দিষ্ট কোনো দিকে জনমত ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় ইদানীং ‘বট অ্যাকাউন্ট’ তৈরির চল রয়েছে। তাতে একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে করা একটি টুইটই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বহু মানুষের নামের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিফলিত হয়। আপাতদৃষ্টিতে যা দেখে মনে হয়, অনেক মানুষ একই মত পোষণ করছেন। মাস্কের আমলে এই চালাকির সুযোগ থাকবে না। তবে প্রশ্ন হলো, কৃত্রিমভাবে নিয়ন্ত্রিত ভুয়া অ্যাকাউন্ট আর সত্যি অ্যাকাউন্ট, যেগুলো সাধারণত ‘বট অ্যাকাউন্ট’-এর মতোই ব্যবহার করেন ব্যবহারকারীরা, তার পার্থক্য ধরা যাবে কী করে?

ব্যবস্থাপনায় নিরপেক্ষতা: থাকবে না জটিলতার নামগন্ধ। কোন টুইট কতটা বেশি পরিমাণে ছড়াবে, তা নির্ধারিত হবে ঘোষিত ‘অ্যালগরিদম’-এর সাহায্যে। সূত্রে ফেলে মিলিয়ে নিতে পারবেন যে কেউ। এর ফলে কোনো টুইট কত মানুষের টুইটার হ্যান্ডলে প্রতিফলিত হবে, সে জন্য অজানা কোনো ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হবে না ব্যবহারকারীদের। স্বচ্ছ পদ্ধতির সাহায্যে যেকোনো সময় মিলিয়ে নেওয়া যাবে, কোন টুইটের দৌড় কত দূর।

তবে টুইটারের মালিকানা বদল নিয়ে হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, টুইটার যেই পরিচালনা করুক বা মালিক যেই হোক না কেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্ষমতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট বেশ উদ্বিগ্ন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement