সিয়াম সাধনা ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। এ মাসে মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে ছোট-বড় সব রকমের আমলে জড়িয়ে পড়ে মুসলিম উম্মাহ। এ মাসে এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়, যা রোজার মহিমা ক্ষুণ্ন করে। রোজার মতো মহিমান্বিত ইবাদতকে ত্রুটিযুক্ত করে।
রোজাদারের জন্য সব ধরনের অশ্লীল ও পাপ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। শুধু পানাহার ও স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয়।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যখন তোমাদের কেউ কোনো দিন রোজা অবস্থায় ভোরে উপনীত হয়, সে যেন অশ্লীল কথাবার্তা ও জাহিলি আচরণ না করে। যদি কেউ তাকে গালাগাল করে বা তার সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হতে উদ্যত হয় তখন সে যেন বলে, আমি রোজা পালনকারী, আমি রোজা পালনকারী।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৯৩)
এ মাসেরও আমরা অনেকে গালাগালের মতো এই নিকৃষ্ট অভ্যাসটি ত্যাগ করতে পারি না। সামান্য ব্যাপারেই অন্যকে গালি দিয়ে বসতে ন্যূনতম দ্বিধাবোধ করি না। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। শুধু রোজা কেন, স্বাভাবিক অবস্থায়ও কাউকে গালি দেওয়া মুমিনের কাজ নয়। গালাগাল, ঝগড়া-ফ্যাসাদ ইত্যাদি অভ্যাস মুমিনের সঙ্গে যায় না।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসেকি। আর তার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করা কুফরি। (বুখারি, হাদিস : ৬০৪৫)
মহানবী (সা.) অশ্লীলভাষী ছিলেন না। তিনি কথাবার্তায় অশ্লীলভাষার প্রয়োগ পছন্দ করতেন না। তাই মুমিনদের তিনি এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও গালাগালকারী হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০৪৩)
অনেকে তো রোজা রেখেই নিশ্চিন্তে মা-বাবা তুলে গালি দিয়ে বসে। অথচ রাসুল (সা.) বলেন, ‘কবিরা গুনাহগুলোর একটি হলো নিজের মা-বাবাকে অভিশাপ করা।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আল্লাহর রাসুল, মানুষ নিজের মা-বাবাকে কিভাবে অভিশাপ করে?’ তিনি বলেন, ‘যখন সে অন্যের বাবাকে গালাগাল করে, তখন সে নিজের বাবাকেও গালাগাল করে থাকে। আর যে অন্যের মাকে গালি দেয়, বিনিময়ে সে তার মাকেও গালি দেয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯৭৩)।