১৬ মে, ২০২৪, বৃহস্পতিবার

লাশের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার, মর্গের পাহারাদার গ্রেফতার

Advertisement

কিশোরীদের লাশের সঙ্গে বিকৃত যৌনচারের অভিযোগে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) মর্গের পাহারাদার সেলিমকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরী থেকে সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়। পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘চমেক লাশ ঘরে কম বয়সী দুই নারীর সঙ্গে যৌনচারের অভিযোগে সোমবার সিআইডির এসআই কৃঞ্চ কমল ভৌমিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় সেলিম নামে এক ব্যক্তির নাম উল্লেখসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে সেলিমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।’

কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার সাতেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা সেলিম বর্তমানে চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তার বিরুদ্ধে আগেও নারী নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচলাইশ থানায় অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহেদুল কবির।

সিআইডি সূত্র জানায়, ২০২১ সালে নগরীর চকবাজার ও চান্দগাঁও থানা এলাকায় পৃথক ঘটনায় ১২ বছরের এক শিশু ও ৩২ বছরের এক নারী আত্মহত্যা করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। গত বছর ৭ ফেব্রুয়ারি নারীর ও একই বছর ২৫ এপ্রিল শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

লাশগুলোর পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনও আঘাতের চিহ্ন কিংবা জোর জবরদস্তি কিংবা ধর্ষণের আলামত মেলেনি। ময়নাতদন্তের পর লাশ দুটিতে ধর্ষণের আলামত পরীক্ষা করতে হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব (এইচভিএস) নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখানে ডিএনএ পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলে। দুই নমুনাতেই একই পুরুষের শুক্রাণুর (বীর্য) উপস্থিতি পাওয়া যায়। এরপর ঘটনা তদন্তে নামে সিআইডি।

সিআইডির এসআই কৃঞ্চ কমল ভৌমিক দীর্ঘ তদন্তে প্রাথমিকভাবে চমেক পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন লাশ ঘরের পাহারায় থাকা অস্থায়ী কর্মচারী সেলিমকে সন্দেহ করে।

সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, তদন্তের এক পর্যায়ে কৌশলে সেলিমকে সিআইডি চট্টগ্রাম অফিসে চায়ের দাওয়াত দেওয়া হয়। চা পানের পর সেলিমের মুখ থেকে কাপে লেগে থাকা লালার নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষার ফলাফলে নিশ্চিত হওয়া যায় ওই মরদেহ দুটিতে যে ব্যক্তির শুক্রাণুর উপস্থিতি ছিল তা সেলিমের।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, ‘১২ বছরের এক শিশু ও ৩২ বছরের এক নারীর লাশের সঙ্গে যৌনাচারের অভিযোগে সেলিম নামে লাশ ঘরের এক অস্থায়ী কর্মচারীকে নগরী থেকে গ্রেফতার করা হয়।’ এ ঘটনায় তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement