২৭ এপ্রিল, ২০২৪, শনিবার

দেড় কোটি লিটার সয়াবিন-পাম তেল রপ্তানি ১০ মাসে

Advertisement

.১০ মাসে দেড় কোটি লিটার সয়াবিন-পাম তেল রপ্তানি
গত ১০ মাসে সয়াবিন তেল রপ্তানি হয় ৮৬ লাখ লিটার। আর পাম তেল রপ্তানি হয় প্রায় ৬৩ লাখ লিটার।
.সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার গড় রপ্তানি মূল্য ছিল ১৪৭ টাকা।
.পাম তেলের গড় রপ্তানি মূল্য ছিল প্রতি লিটার ১২৯ টাকা।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানি হওয়া তেলের ৯৯ শতাংশই রপ্তানি হয়েছে ভারতে।

দেশের বাজারে এখন সয়াবিন ও পাম তেলের তীব্র সংকট চলছে। দেশে সংকট থাকলেও তেল দুটি রপ্তানিও হচ্ছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ১ কোটি ৪৯ লাখ লিটার পাম ও সয়াবিন তেল রপ্তানি করেছে এ দেশের পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো, যার সিংহভাগই রপ্তানি হয়েছে ভারতে।

তেল রপ্তানিতে মূল্য সংযোজন হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা আসছে। কিন্তু দেশে সংকটের এ সময়ে রপ্তানি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার মতো শীর্ষ পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ নিজেদের বাজার সামাল দিতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমদানি কমে যাওয়ার প্রভাবে দেশে রোজার আগে থেকে তেল নিয়ে সংকট শুরু হয়। এখনো এই সংকট কাটেনি।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর চার বছর ধরে রপ্তানি হচ্ছে এ দুটি ভোজ্যতেল। সয়াবিন ও পাম তেল রপ্তানি করে ১০ মাসে আয় ২০৭ কোটি টাকা।

তবে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, চলমান সংকটের সময় এ বছর কোনো তেল রপ্তানি করেনি তারা। দেশে সরবরাহেই প্রাধান্য দিয়েছে তারা। রপ্তানির যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তা সংকটের আগে, গত বছরের।

বছর চারেক আগেও পাম ও সয়াবিন তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ২০১৫-১৮ সালের রপ্তানি নীতিতে রপ্তানি নিষিদ্ধ পণ্য তালিকায় ১ নম্বরে ছিল সয়াবিন ও পাম তেল। দেশে চাহিদার তুলনায় পরিশোধন সক্ষমতা বেড়েছে। বীজ মাড়াই করেও সয়াবিন তেল উৎপাদিত হচ্ছে। এরপর দুটি পণ্যকে শর্ত সাপেক্ষে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের তালিকায় রাখা হয়; অর্থাৎ অনুমতি নিয়েই রপ্তানি হচ্ছে সয়াবিন ও পাম তেল।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, প্রধান দুই ভোজ্যতেলের মধ্যে সয়াবিন তেল সবচেয়ে
বেশি রপ্তানি হচ্ছে। গত ১০ মাসে তেলটি রপ্তানি হয় ৮৬ লাখ লিটার। আর পাম তেল রপ্তানি হয় প্রায় ৬৩ লাখ লিটার। এ থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় ২০৭ কোটি টাকা। ভোজ্যতেলের সিংহভাগই রপ্তানি হয়েছে গত বছরের শেষ দিকে। এ বছরের প্রথম ৪ মাসে ১৫ লাখ লিটার সয়াবিন ও পাম তেল রপ্তানি হয়।

দেশ থেকে পাম ও সয়াবিন তেল রপ্তানিকারকের তালিকায় আছে টিকে গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ও দেশবন্ধু গ্রুপের এসজি অয়েল রিফাইনারি। জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এ বছর কোনো তেল রপ্তানি করিনি। সংকটের এ সময়ে তেল রপ্তানির প্রশ্নই ওঠে না। যেসব তেল রপ্তানির হিসাব দেখানো হচ্ছে, তা আগের।’

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার গড় রপ্তানি মূল্য ছিল ১৪৭ টাকা। তবে প্রতি লিটার সর্বোচ্চ ১৬০-১৬৩ টাকা দরে সয়াবিন তেল রপ্তানি হয়েছে। আর পাম তেলের গড় রপ্তানি মূল্য ছিল প্রতি লিটার ১২৯ টাকা। তবে সর্বোচ্চ ১৫৩ থেকে ১৬৪ টাকায়ও রপ্তানি হয়েছে পাম তেল।

পাম ও সয়াবিন তেল শোধিত ও অশোধিত আকারে আমদানি করে কোম্পানিগুলো। দেশে পরিশোধন করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এর বাইরে দুটি প্রতিষ্ঠান সয়াবিন বীজ ভাঙিয়ে সয়াবিন তেল উৎপাদন করে। এই দুটি প্রতিষ্ঠান হলো সিটি গ্রুপ ও মেঘনা গ্রুপ।

কোম্পানিগুলো বলছে, দেশীয় চাহিদার চেয়ে উৎপাদনক্ষমতা অনেক বেশি। তাতে চাহিদার অতিরিক্ত সয়াবিন ও পাম তেল রপ্তানি করে তারা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানি হওয়া তেলের ৯৯ শতাংশই রপ্তানি হয়েছে ভারতে। এ ছাড়া জাপানেও রপ্তানি হয়েছে দুটি চালান।

পাম তেল ও সয়াবিন তেল ছাড়াও দেশে উৎপাদিত শর্ষে ও ধানের কুঁড়ার তেলও রপ্তানি হচ্ছে। শর্ষের তেল রপ্তানি করছে প্রাণ ও স্কয়ার গ্রুপ। এ ছাড়া এসিআই ফুডস, আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডও সামান্য পরিমাণে রপ্তানি করছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ১০৪ কোটি টাকার সমমূল্যের ৫২ লাখ লিটার শর্ষের তেল রপ্তানি হয়েছে। আর ধানের কুঁড়া থেকে উৎপাদিত তেলও রপ্তানি করছে দেশীয় কয়েকটি কারখানা।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে উৎপাদিত শর্ষের তেল রপ্তানি অনেক আগে থেকেই হচ্ছে। তবে পাম ও সয়াবিন তেল রপ্তানি হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর থেকে। চার বছর ধরে রপ্তানি হচ্ছে এ দুটি তেল।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement