একই জমিতে ২০ প্রজাতির সবজি চাষ করছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের এমদাদুল হক। ২০১৭ সালে প্রথমে ইউটিউব দেখে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ শুরু করেন তিনি। এতে বেশ সফলও হয়েছেন এমদাদুল। প্রতি মাসে তার আয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে তিনি সবজি চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় মধুও চাষ করছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষিজমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বসতবাড়ির আঙিনাসহ পতিত ১৫ একর জমিতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ প্রজাতির সবজি চাষ করেছেন এমদাদুল হক। এর মধ্যে রয়েছে লালশাক, পুঁইশাক, ঢেঁড়স, লাউ, পেঁপে, বেগুন, কলা, করলা, ঝিঙা, কাঁচামরিচ, মেটস, কাঁকরল ইত্যাদি। পরিবারের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে এই সবজিগুলো বাজারেও বিক্রি করছেন তিনি।
এমদাদুল হক বলেন, ‘সম্পূর্ণ কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই ২০ প্রজাতির সবজি চাষ এ জমিতে। বাড়ির উঠানসহ প্রায় ১৫ একর জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করি। এতে পরিবারের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হয়।’
তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করার পর ইউটিউব দেখে কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ হই। শাইখ সিরাজের ভিডিও দেখতাম বেশি। তার প্রতিবেদনগুলো আমার আস্তে আস্তে ভালো লাগতে শুরু করে। পরে আমি কৃষিকাজ করার সিদ্ধান্ত নিই। পরে পতিত জমিতে স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তা ও পরামর্শে চাষাবাদ শুরু করি।’
মাঠজুড়ে সরিষা ফুল, কৃষক ও মৌয়ালদের কর্মব্যস্ততা
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম চাষে ক্ষেতে বাম্পার ফল হয়েছে। এতে আমার লাখ টাকা আয় হয়। পরে পরিবারের উৎসাহ পেয়ে আবারও চাষ শুরু করি। এ কাজে আমার বাবা ও ছোট ভাই আমাকে সহায়তা করছেন। সেরা কৃষক হিসেবে আমাকে জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে সম্মাননা পদক দিয়েছে। বর্তমানে আমি কৃষিকাজের পাশাপাশি মৌমাছি চাষ করছি। বিভিন্ন জেলায় জমি লিজ নিয়ে সেখান থেকে মধু সংগ্রহ করছি।’
এমদাদুল বলেন, ‘ট্রাকে করে বাক্সভর্তি মৌমাছি আর ড্রাম নিয়ে যাই বিভিন্ন জেলায়। বাক্সের মৌমাছি সরিষা জমিতে ছেড়ে দিই। পরে মৌমাছিগুলো ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে আবার মৌচাকে ফিরে আসে। সেখান কয়েকটি পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করি।’
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এমদাদুল হক একজন পরিশ্রমী কৃষক। তার উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। তিনি এরই মধ্যে উপজেলায় কৃষিকাজে সফলতা পেয়েছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তার পাশে থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা করছে।’