১২ মে, ২০২৪, রবিবার

৮ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় দেশের কয়েকটি এলাকা

Advertisement

বরিশাল : ৮ ডিসেম্বর দুপুরে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা গানবোট, লঞ্চ, স্টিমারে বরিশাল থেকে গোপনে পালিয়ে যায়। তবে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের গোপনে পালানোর খবরটি জানাজানি হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের মিত্রশক্তি ভারতীয় বিমান বাহিনী দুপুর ২টায় বরিশালে হামলা চালায়। বিকেল ৩টায় বরিশালের অদূরে অবস্থানরত সুলতান মাস্টার ও আবদুল মান্নানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল প্রবেশ করে শহরের নিয়ন্ত্রণ নেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার এনায়েত হোসেন চৌধুরী জানান, বরিশাল মুক্তদিবস পালনে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

খাগড়াছড়ি :মুক্তিযোদ্ধা সমর কৃষ্ণ চক্রবর্তী জানান, ৬ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি ভারতীয় জঙ্গি বিমানের সহায়তায় রামগড়ের হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনার ওপর গোলাবর্ষণ করেন। এ হামলায় অনেক হানাদার মারা যায় এবং বাকিরা ভীত হয়ে ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে রামগড় ত্যাগ করে। ৮ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় দুটি ভারতীয় জঙ্গি বিমান সমগ্র রামগড় পরিক্রমা করে নির্বিঘ্নে ঘাঁটিতে পৌঁছে রামগড় হানাদারমুক্ত বলে খবর পৌঁছায়। এর পর রামগড়ের মুক্তিকামী মানুষ আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রয়াত সুলতান আহম্মদ মুক্তিকামীদের নিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন এবং রামগড় হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন।

কালকিনি :১৯৭১ সালের এই দিনে কালকিনির মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

মনিরামপুর (যশোর): এ দিনে মুক্তিসেনারা মনিরামপুরের সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার উজ্জ্বলপুর গ্রাম হয়ে মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ-চণ্ডীপুর এলাকায় পাকিস্তানি ক্যাম্পে হানা দিলে সেখানে যুদ্ধে শহীদ হন মুকুন্দসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিকামী। এর পর হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে।

নলছিটি (ঝালকাঠি) :৬ ডিসেম্বর সকালে পাকিস্তানি বাহিনী ঝালকাঠি এলাকা ছেড়ে নদীপথে বরিশালের দিকে পালিয়ে যায়। এতে রাজাকার বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে। ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা ঘিরে ফেলেন নলছিটি শহর। এ সময় রাজাকার, আলবদর ও পুলিশ (তৎকালীন) বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন নলছিটি থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেকান্দার আলী মিয়ার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সম্পূর্ণ হানাদারমুক্ত করেন নলছিটিকে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে যুদ্ধ হয়। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়ামুক্ত হওয়ার পর মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ দিক থেকে এবং মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্টের ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানীসার সড়ক দিয়ে অগ্রসর হতে থাকেন। শহরের চারদিকে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নিতে থাকায় পাকিস্তানি বাহিনীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কেএম লুৎফুর রহমানসহ কারাগারে আটক থাকা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর বিনা বাধায় মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement