২৬ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

২৩০ জন জীবিত মানুষকে মৃত তালিকায় হালনাগাদ

Advertisement

গোপালপুরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় ২৩০ জন জীবিত মানুষকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর আগেও উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ২৭ জন মৃত্যু হওয়ার ভুল তথ্য সংশোধন করেছেন।

বিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই চন্দ্র দাসের স্ত্রী সাবিত্রী রানী অভিযোগ করেন, গত বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় তাকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে দেখেন ডাটাবেজে তাকে মৃত দেখাচ্ছে। পরে নির্বাচন অফিসে গেলে তিনি যে জীবিত আছেন তার প্রমাণস্বরূপ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের সনদপত্রসহ আবেদন করতে বলে। পরে ধোপাকান্দি ইউপির চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেন যে, ‘সাবিত্রী রানী মারা যাননি।

তিনি সশরীরে ইউপি অফিসে হাজিরা দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে জীবিত রয়েছেন। অতএব মৃত্যু হওয়ার ভুল তথ্য সংশোধন করে তাকে হয়রানি থেকে মুক্ত করা হোক।’

একইভাবে পৌরসভার গাংগাপাড়া গ্রামের আমান আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, জোতবিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই দাসের ছেলে দীপক দাসসহ ২৭ জনকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় স্কুল-কলেজে সন্তানের ভর্তি, বয়স্ক ভাতার টাকা উঠানো, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাওয়া এবং ব্যাংকের সেবা থেকে ৬ মাস বঞ্চিত ছিলেন। অনেকেই ভাতার টাকা বা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা তুলতে না পেরে চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিশেষ ফরমে আবেদন করে মৃত তালিকা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করতে সক্ষম হন। উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন জানান, বছর খানেক আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য দেড় শতাধিক মাঠকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা প্রত্যেকেই ছিলেন স্কুল শিক্ষক।

বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং মৃত ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত করেন তারা। এদের প্রত্যেককে নিয়মাবলী শেখানো হয়। কিন্তু তারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। জীবিতদের মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাদের হয়রানির করেছেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাঠকর্মীদের সন্তোষজনক হারে সম্মানি দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু পরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় আড়াইশ জীবিত মানুষকে মৃত দেখানো হয়েছে। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এ তালিকা সংশোধন করতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এসব অসম্পূর্ণ বা ভুল তথ্য দিয়েছেন তা সংশোধনে কাজ চলছে। প্রতিদিনই মৃতের তালিকায় নাম উঠা ব্যক্তিরা ভোগান্তি নিয়ে অফিসে আসছেন। আর আমরা আইসিইউ থেকে সিরিয়ালি বের করে তা সংশোধন করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে এসব মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মামলা করা হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement