মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর দেশের বিভিন্ন এলাকা পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়।
নেত্রকোনা : আজ ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে ৯ মাস যুদ্ধে নেত্রকোনা জেলায় ৫৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ শত শত নিরস্ত্র মানুষ নিহত হন। সম্ভ্রম হারান কয়েকশ’ মা-বোন। ২৫ শে এপ্রিল পাকবাহিনী নেত্রকোনা শহরে প্রথম প্রবেশ করে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে ডা. মিহির সেন, তার ভাই সিদ্ধার্থ সেন ও বাড়ির কাজের লোক করুনাকে। পরে রাজাকাররা ধরে নিয়ে হত্যা করে মিহির সেনের বাবা ও কাকা হেম সেন এবং অখিল সেনকে।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) : ৮ ডিসেম্বর দাউদকান্দির বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানসিকভাবে দ্বিগুণ বলীয়ান হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইলিয়টগঞ্জ, শহীদনগর ওয়্যারলেসকেন্দ্র এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাউদকান্দির ডাকবাংলোতে অবস্থানরত পাকিস্তান সেনাদের টার্গেট করে চারদিক থেকে একযোগে আক্রমণ শুরু করেন। মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর হুমাইয়ন কবির জানান, এদিন মোহাম্মদপুর, ডাকখোলা, গোয়ালমারী, বাতাকান্দি এলাকার ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রসর হতে থাকেন হানাদারদের ক্যাম্পগুলোর দিকে। ৯ ডিসেম্বর দাউদকান্দি শত্রু মুক্ত হয়।
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) : আফসার বাহিনীর নেতৃত্বে ৮ ডিসেম্বর সারারাত সম্মুখ যুদ্ধ করে। পরে পাকহানাদার বাহিনীরা পালিয়ে যায়। জৈমত আলীর নেতৃত্বে নজরুল একাডেমি মাঠে ৯ ডিসেম্বর ত্রিশালকে মুক্ত ঘোষণা করে পতাকা উত্তোলন করেন।
অভয়নগর (যশোর) : স্বাধীনতাকামী জনগণের সক্রিয় সহযোগিতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সশস্ত্র সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর অভয়নগর পাক-হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল।
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : শহীদদের রক্তের বদলা নিতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৮ ডিসেম্বর পুনরায় সুসংগঠিত হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। ভয়াবহ আক্রমণের মুখে পাকিস্তান হানাদাররা ভীত হয়ে গভীর রাতে থানা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ৯ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় ঈশ্বরগঞ্জ।
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) : ৯ ডিসেম্বর, নাজিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে নাজিরহাটে পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। ভোরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে টিকে থাকতে না পেরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পিছু হটে। এদিকে গোপন সংবাদ পেয়ে পলাতক পাকবাহিনী সন্ধ্যায় হাটহাজারীর অদুদিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে ৩-৪টি বাসে করে নাজিরহাটে আসে। তারা উল্লাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ জনতার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। ওই যুদ্ধে ১১ জন শহীদ হন।