২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

জলবায়ু-করোনায় বিশ্বনেতাদের কাছে তহবিলের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং অতিরিক্ত তহবিলের ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছেন বিশ্বসভায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবন থেকে ‘প্রথম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অর্থ সম্মেলন উদ্বোধনের সময় তিনি এসব প্রস্তাব রাখেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি। ‘প্রথম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অর্থ সম্মেলন (ভার্চুয়াল)’ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং উন্নত দেশগুলোর উচিত তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব এবং নৈতিক এবং আইনি বাধ্যবাধকতা পালন করা।

মহামারি পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে চলমান কোভিড-১৯ মহামারি নতুন করে মানুষের জীবনে দুঃখ-কষ্ট যোগ করেছে। চলমান ও ভবিষ্যতের সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের অবশ্যই ঐক্য গড়ে তুলতে হবে এবং সহযোগিতা বাড়াতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা: জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তাব রাখেন। এগুলো হলো- এক. বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে এক দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে রাখার জন্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন রোধে প্রতিটি দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য অনুসরণ। দুই. সিভিএফ-ভি২০ দেশের সবুজ পুনরুদ্ধার, মূলধনের ব্যয়-হ্রাস ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার প্রতি উন্নত দেশগুলোর সমর্থন। তিন. তহবিলের প্রবাহ অবশ্যই অনুমানযোগ্য, ভারসাম্যপূর্ণ, উদ্ভাবনী এবং বর্ধনশীল হওয়া। চার. জলবায়ুর ক্ষতির মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানো। পাঁচ. ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’-এর মতো ‘ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ গ্রহণ করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু অর্থায়নের জন্য প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দিতে যে ঐকমত্য হয়েছিল, তা ছাড় করার ওপরও আমরা নির্ভর করছি। একই সঙ্গে ঢাকা-গ্লাসগো ঘোষণা অনুযায়ী, কপ ২৬ ও সিভিএফের একটি যৌথ প্রকল্প নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। জলবায়ু পরিস্থিতি উন্নয়নে উদ্ভাবনী অর্থায়ন সমাধান খুঁজতে সম্মেলনে অংশ নেওয়া অর্থমন্ত্রী, উন্নয়ন সহযোগী, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকে তাগিদ দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সারা বিশ্বেই দেখা যাচ্ছে। আমাদের নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে টিকিয়ে রাখতে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সিভিএফ-ভি২০ভুক্ত ৪৮টি দেশ বৈশ্বিক দূষণের মাত্র পাঁচ শতাংশের জন্য দায়ী। অথচ তারাই এই মানবসৃষ্ট সঙ্কটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। একই সঙ্গে চলমান কোভিড-১৯ মহামারি লাখো মানুষের জীবন এবং জীবিকার ক্ষতির কারণ হয়ে নতুন সঙ্কট তৈরি করেছে। মানব ইতিহাসের এ ক্রান্তিলগ্নে আমাদের অবশ্যই একতাবদ্ধ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সঙ্কট মোকাবিলা করতে হবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ প্রথম অর্থমন্ত্রীদের জন্য এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলার অর্থায়ন সম্মেলন বা ক্লাইমেট ভালনারেবলস ফাইন্যান্স সামিট। অনলাইনে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের ফোরাম ‘ভালনারেবল-২০’। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement