করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত খুলনা। খুলনার চারটি হাসপাতালে সর্বোচ্চ ২২ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে একদিনে সর্বাধিক মৃত্যুর রেকর্ড সৃষ্টি হলো। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার (৭ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
মৃতদের মধ্যে খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ১০ জন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৫ জন, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২ জন, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে করোনায় ৯ জন ও উপসর্গে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় মৃত ব্যক্তিরা হলেন- খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গার ঝর্ণা বেগম (৬০) ও লবনচরার রুমানা বেগম (৭১), বটিয়াঘাটার নারায়ন চন্দ্র (৮০), বাগেরহাট ফকিরহাটের সুনীল রায় (৭৫), একই এলাকার বাগানবাড়ীর আব্দুল হামিদ (৮৭), নড়াইল নড়াগাতীর এসএম বোরহান (৪৫), যশোর সদরের ঝুমুর বেগম (২৫), কেশবপুরের সুশান্ত কুন্ডু (৫৫), একই এলাকার শরিফা খাতুন (২৭)।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৮৯ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১১৬, ইয়ালো জোনে ৩৪, আইসিইউতে ২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪১ এবং সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরেছেন ৩২ জন।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মুখপাত্র ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- খুলনার পাইকগাছার আব্দুল হালিম (৫০) ও সাতক্ষীরার আব্দুল মাজেদ শেখ (৬৫)। করোনা আক্রান্ত ৪৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৯ জন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- নগরীর ফুলবাড়ীগেট মিরেরডাঙ্গার রেজাউল ইসলাম (৭০), তেরখাদার আনন্দনগরের আকলিমা (৭৫), যশোরের কেশবপুরের পদ্মরানী (৬৪), বাগেরহাটের মংলার প্রভুনাথ (৫০), রামপালের রুহিকরণ (৬০)। এছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৫, তার মধ্যে ৩২জন পুরুষ ও ৩৩ জন মহিলা। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ জন।
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের মালিক ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- খুলনা সদরের মুসলমানপাড়ার নাসরিন আরা বেগম (৪৫), সোনাডাঙ্গার মোঃ আব্দুল হাই (৬৭), ডুমুরিয়ার শাহাপুরের উম্মে কুলসুম (৭০), খুলনার টুটপাড়ার নাসিমা বেগম (৪৬) এবং নড়াইলের লোহাগড়ার আরিয়ানার বেলতিয়ার লুৎফর রহমান (৬২)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ১৩১ জন। এরমধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৮ জন ও এইচডিইউতে আছেন ৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ জন। পিসিআর ল্যাবে ৫৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৪২ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে।
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ।