৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, মঙ্গলবার

দুই সপ্তাহ ঘরে থেকে ৫০ বছর বাঁচুন : আইজিপি

Advertisement

বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘চলমান লকডাউন দুই সপ্তাহ অনেক বেশি দিন না। এ দুই সপ্তাহের কারণে আপনি যদি ৫০ বছর বাঁচতে পারেন, তাহলে দুই সপ্তাহ ঘরে থাকতে হবে। মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত করবেন কি-না, সেই সিদ্ধান্ত আপনার নিজের।’

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি কর্তৃক দুস্থদের মাঝে খাবার ও নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘কঠোর লকডাউনেও অনেকের বাসায় থাকতে ভালো লাগে না, বিরক্ত লাগে। অনেকেই আবার লকডাউন কেমন হচ্ছে, তা দেখতে বের হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘নিজেরা বাইরে বের হয়ে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অসুস্থ হবেন। এরপর হাসপাতালে গিয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে অ্যাটাক (আক্রমণ) করবেন, এটা ঠিক নয়। দয়া করে এ কাজগুলো করবেন না। আসুন সবাই মিলে দেশটাকে রক্ষা করি। দুই সপ্তাহের কারণে আপনি যদি ৫০ বছর বাঁচতে পারেন, তাহলে দুই সপ্তাহ ঘরে থাকতে হবে।’

আইজিপি বলেন, ‘গুলশান এলাকায় অনেক ট্রাফিক বেড়ে গেছে। তাদের প্রত্যেকেরই জরুরী কাজ। এই মহামারিতে যদি ১৮ কোটি লোক আক্রান্ত হয়, প্রত্যেকের জন্য হাসপাতালের বেড দেয়া সম্ভব না। উন্নত দেশগুলোও পারেনি। দয়া করে রাস্তাঘাটে ভিড় করবেন না। জরুরী কাজ একটু কমান। বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে কেউ বের হবেন না।’

পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘ঢাকা বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র। এই শহরে কয়েক কোটি লোকের বাস। এর বাইরেও ঢাকার বাইরের আশপাশের এলাকা থেকে কাজের জন্য অনেকেই ঢাকায় আসেন। এই শহরে বৈশ্বিক ধনী লোক থেকে শুরু করে বস্তিবাসীরাও বাস করে। সবাই মিলেই আমরা করোনা অতিমারির দুর্যোগ মোকাবিলা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। সেসময় খালি হাতে দুর্ধর্ষ পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করেছি আমরা। কারণ আমাদের জাতিগত ঐক্য ছিল। এ করোনা দুর্যোগও আমরা মোকাবিলা করতে পারব। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং আমাদের জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে। যে যেখানে আছি, সেখান থেকে কাজ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করছেন এই লকডাউনে যেন কোনো পরিবার কষ্টে না থাকে।’

‘এছাড়াও আমরা আশা করব- যারা সচ্ছ্বল আছেন, তারা নিজেদের সাধ্যমত মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি আমরা যদি সবাই মিলে হাত লাগাই, তাহলে শিগগিরই এই মহামারি মোকাবিলা করতে পারব। আর করোনা সেকেন্ড ওয়েভের স্থায়ীত্ব নির্ভর করে আমাদের প্রত্যেকের আচরণের উপর। আমরা সবাই মিলেই রাষ্ট্র’ যোগ করেন আইজিপি।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আইসিইউ বানালেই কিন্তু চালানো যায় না। আইসিইউয়ের জন্য বিশেষায়িত ডাক্তার, নার্স দরকার হয় এবং বিশেষায়িত মেডিকেল স্টাফ দরকার। আপনি চাইলে আইসিইউ বেড কিনতে পারবেন। কিন্তু আপনি চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে স্টাফ বানাতে পারবেন না। সম্ভব হলে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন ট্যাংক বসিয়ে লাইন করে দেয়া উচিত। তাতে করে একটি ট্যাংক থেকে অনেক রোগী অক্সিজেন নিতে পারবে। আমরা আমাদের হাসপাতাল করেছি। একসময় আমাদের আইসিইউ ছিল ১০টি। এখন সেটি ৫০টিতে উন্নিত করেছি। এর বাইরেও আমরা প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে লাইন দিয়ে অক্সিজেন দিয়েছি। যেটাতে অনেক কম খরচ হয়। আপদকালীন সময়ে সাশ্রয় হয়।’

এ দুর্যোগের দিনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের রাষ্ট্রীয় কর্তব্য, ধর্মীয় কর্তব্য জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘এ ধরনের কাজে যদি সহযোগিতা লাগে তাহলে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী আপনাদের সঙ্গে আছে। যদি আপনি সাহায্য করতে চান কিন্তু আপনার সাহায্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষমতা না থাকে, আমাদের বলবেন। আমরা পৌঁছে দেব আপনার পক্ষ থেকে। আসুন আমরা হাতে হাত ধরে কাজ করি এবং এই দুর্যোগ অতিক্রম করি।’

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এফবিসিসিআই-এর সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা করোনা মোকাবিলা করতে পারব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এক কোটি লোকের জন্য সাহায্যের উদ্যোগ নিয়েছেন। মানুষকে সচেতন করার জন্য আমরাও আগামী সপ্তাহ থেকে এফবিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি শুরু করব। বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ-এর সমস্যা আছে, অক্সিজেনের সমস্যা আছে। এইগুলো দূর করতে এফবিসিসিআই চেষ্টা করে যাবে।’

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement