২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

চেক প্রতারণায় আইনি প্রতিকার

Advertisement

ব্যবসায়িক ও অন্যান্য যে কোন প্রয়োজনে এখনকার যুগে চেক-এর ব্যবহার অনস্বীকার্য । সেজন্য চেককে ‘বিনিমিয় যোগ্য হস্তান্তর দলিল’ হিসেবে বর্ণনা করা হয় । আর এই চেক-কে কেন্দ্র করেই বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যবসায়ীক লেনদেন একইসাথে বেড়েছে চেক-এর প্রতারণা। ধরে নেয়া যাক, ব্যবসায়ীক লেনদেনের জের ধরে আপনাকে কেউ নগদ টাকা না দিয়ে একটি চেক দিলো । চেক নিয়ে নির্দিষ্ট ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে দেখলেন ‘অপর্যাপ্ত তহবিল’ মূলে চেকটি ডিজঅনার হয়েছে । আপনি বারবার চেক প্রদানকারী ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করেও পাওনা অর্থ আদায়ে ব্যর্থ হলেন। সে ক্ষেত্রে আপনি ধরে নিতে পারেন, আপনি চেক প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

চেক প্রতারণার শিকার হলে আইনি পদক্ষেপ জানা খুব জরুরী । তাহলে প্রক্রিয়া অনুযায়ী খুব সহজেই আপনি পাওনা উদ্ধার করতে পারবেন। এর জন্য প্রথমেই আপনাকে ব্যাংক থেকে চেক ডিজঅনারের স্লিপ সংগ্রহ করতে হবে। স্লিপে অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে চেক ডিজঅনার হয়েছে কি না সেটা খেয়াল করুন। এর ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি নোটিশ দিতে হবে। এরপরও আপনার টাকা পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি মামলা করতে পারেন।

মামলা আমলে নেয়ার পর আদালত আসামী বরাবর সমন জারি করেন। অতঃপর আসামী যদি সমন পেয়েও আদালতে হাজির না হন, তবে আদালত আসামী বরাবর গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করতে পারেন। পরোয়ানা জারির পরেও যদি আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে না পারে, তাহলে বাদী আসামীর সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করতে পারবেন। তাতেও যদি আসামী আদালতে না হাজির হন তাহলে বাদী জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মামলার কার্যক্রম চালাতে পারবেন।

আসামী যদি অর্থ পরিশোধ করেন তবে তিনি মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন । অন্যথায়, মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্বভাবগত প্রক্রিয়াতেই চলবে । আসামী যদিও জামিন পাবেন । তবে তাকে ধার্য তারিখে আদালতে হাজিরা দিতে হবে । আর যদি আসামী পলাতক থাকেন । তবে আদালত তাকে পলাতক দেখিয়েই বিচার কার্য সম্পাদন করবেন এবং রায় প্রদান করবেন ।

তবে এ পর্যায়ে উল্লেখ্য হচ্ছে আপনি কোন কারণে চেকে উল্লেখিত টাকা পাবেন সে সম্পর্কিত কাগজাদি আদালতে দাখিল করতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে চেকের অর্থ আপনার আইনত প্রাপ্য। আদালত সবকিছু পর্যালোচনা করে আসামীকে সর্বোচ্চ একবছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা দ্বিগুণ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন। আর রায়ের পর আসামী হলে গ্রেপ্তার হলে বাদী দাবিকৃত মোট টাকার অর্ধেক টাকা জমা দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আপিলের শর্তে আসামী জামিন পাবেন। এন.আই অ্যাক্ট-এর ১৩৮ ধারা অনুযায়ী চেক ডিজঅনার মামলা করলে প্রাপ্য অর্থ ফেরত পাবার সম্ভাবনা থাকে। অনেকেই আলোচ্য আইন না জেনে প্রতারণার মামলা করেন। প্রতারণার মামলায় শাস্তি নিশ্চিত হলেও অর্থ পাওয়া যায় না ।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement