২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

“কঠোর বিধিনিষেধ-ছুটি-বৃষ্টি” ঢাকার রাস্তা আজ আরও ফাঁকা

Advertisement

বিধি-নিষেধের দ্বিতীয় দিনেও ফাঁকা রাজধানী ঢাকা। সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধের পাশাপাশি সাপ্তাহিক এই ছুটির দিনের ভোর থেকেই হচ্ছে বৃষ্টি। ফলে সড়কে মানুষের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ব্যক্তিগত যানবাহনও তেমন একটা দেখা যায়নি। বিভিন্ন সড়কে অল্প কিছু রিকশা, মাইক্রোবাস, ট্রাক,কার্ভাড ভ্যান, পিকআপ চলাচল করতে দেখা গেছে।

করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গতকাল থেকে দেশে শুরু হয়েছে সাত দিনের বিধিনিষেধ বা সর্বাত্মক লকডাউনকরোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া দেশব্যাপী এ লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।

রাজধানীর পান্থপথ, বাংলামোটর, খিলগাঁও, ফার্মগেট এলাকায় বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। প্রধান সড়কের তুলনায় অলিগলিতে মানুষের চলাফেরা কিছুটা বেশি চোখে পড়েছে। সকালের দিকে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানের যানবাহন যাতায়াত করতে দেখা গেছে। পণ্যবাহী কিছু যান চলেছে।

গতকাল যাঁরা বিনা কারণে বের হয়েছেন, তাঁদের অনেককেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হতে হয়েছে অথবা জরিমানা দিতে হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, যৌক্তিক কারণ ছাড়া বের হওয়ায় গতকাল ঢাকায় ৪৯৭ জনকে আটক করা হয়।

২৫৮ জনকে গ্রেপ্তার ও ৮ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। এর বাইরে র‍্যাব ৪০টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সারা দেশে ১৮২ জনকে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর গত এপ্রিল থেকে বিভিন্ন মাত্রায় বিধিনিষেধ জারি করে আসছিল সরকার। কয়েকটি জেলা ‘লকডাউন’ও করা হয়। তবে রাজধানীসহ সারা দেশে এবারের বিধিনিষেধের ভিন্ন দিক হলো, এ দফায় সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে মাঠে সেনাবাহিনী ও বিজিবি নামানো হয়েছে। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক ফাঁকা দেখা গেছে।

রাজধানীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেখা গেছে, মালবাহী ট্রাক ও প্রাইভেট গাড়ি। তবে সংখ্যায় খুবই কম। ঢাকায় প্রবেশমুখে শিমরাইল ও সাইনবোর্ডে আজও বসেছে চেকপোস্ট। সেখানে গাড়ির যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে সেই গাড়িকে আর ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

রাজধানীর যাত্রাকাড়ী এলাকায় কথা হয় আয়মান সাদিক নামে একজন পথচারীর সঙ্গে। লকডাউন কেমন হচ্ছে তা বুঝতে আরও দুই একদিন সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি। সড়কে যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণে যে রিকশাগুলো চলছে তারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ওলিউর রহমান নামের আরেক পথচারী রিকশায় রায়েরবাগ থেকে মতিঝিল যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ২০০ টাকা রিকশা ভাড়ায় মতিঝিল যাচ্ছি, একদিকে লকডাউন অন্যদিকে ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় খুব একটা মানুষ দেখতে পাইনি। যেহেতু গণপরিবহন নেই, তাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় যাচ্ছি। এ পর্যন্ত যতটুকু এসেছি সেসব সড়কে কোথাও মানুষের খুব বেশি উপস্থিতি নেই। গতকালের তুলনায় আজ যানবাহনও কম সড়কে।

অন্যদিকে শনিরআখড়া এলাকায় বৃষ্টির মধ্যে মাথায় পলিথিন লাগিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন ওয়াসিমুল নামের একজন রিকশাচালক। তিনি বলেন, ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে মানুষ নেই, তাই ভাড়াও পাচ্ছি না। সকাল থেকে মাত্র দুইটাভা ভাড়া পেয়েছি। গতকালের তুলনায় আজ সড়কে মানুষের সংখ্যা আরও কম। লকডাউন এবার ভালোই হচ্ছে মনে হয়, খুব কম সংখ্যক মানুষকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে।

প্রজ্ঞাপন অনুসারে, কঠোর লকডাউন চলাকালে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহনসহ সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

গতকাল সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনেও রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি কম ছিল। বিভিন্ন সড়কে তৎপর ছিলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বিধিনিষেধ অমান্য করে ঘর থেকে বের হয়ে সড়কে ঘোরাঘুরি করার অপরাধে রাজধানীতে ৪৯৭ জনকে আটকও করা হয়। এর মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৫৮ জনকে আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে আটজনকে। বাকিদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement